দখল বন্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা ; দায় সাড়েন ডিএফও
মাহাবুর রহমান,গাজীপুর: ঢাকা বন বিভাগে গাজীপুরের শ্রীপুর রেঞ্জাধীন সাতখামাইর বিট এলাকায় বেড়েই চলছে গেজেট দখল। নির্মিত হচ্ছে ঘর-বাড়ি, দোকানপার্ট সহ নতুন নতুন স্থাপনা। সরকারি সম্পদ রক্ষার সার্থে দখল বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বন বিভাগের দায়ীত্বরত কর্মকর্তারা। এক সাক্ষাতে রেঞ্জার বলেন রিক্স নেওয়া যাবে না, নিজেদের বাছতে হবে আগে। দখল উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হলে পাবলিকের হামলা হতে পারে।
রেঞ্জারের এমন বক্তব্যের বিপরীতে বনের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, একজন বন কর্মকর্তার (রেঞ্জার) মুখে এমন দায়ীত্বহীন বক্তব্য শুভা পায় না। এমন বক্তব্য রিতিমতো ডিপার্টমেন্টের বদনাম ছাড়া কিছুই না।
অনুসন্ধান তথ্যে জানাযায়, সাতখামাইর বিটের অধীনস্থ টেপিরবাড়ি মৌজার ৫৩ নং দাগের আকন্দ রোডের পাশে শাহীদা নামে একজনের কাছ থেকে বিট কর্মকর্তা নোয়াব হোসেন সিকদার মোটা অংকের টাকা নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। অপরদিকে ছাতির বাজার স্কুলের পাশ দিয়ে কিছুদূর এগোলে কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশে রাজ মিস্ত্রী শফিকুল ইসলামের দালালিতে দেড় বিঘা দখলে নিতে নির্মিত হচ্ছে বাউন্ডারি। সাথেই রতনার কয়েকটি রুমের একটি বাড়ি ও ডিবিএল বাউন্ডারির পূর্ব পাশে বাড়ি ও নাছির ফকিরের বাড়ির পাশে শহিদ মিয়ার বাড়ি সহ আশপাশে বেশ কয়েকটি নতুন স্থাপনার কাজ চলমান রয়েছে।
দালাল শফিকুল ইসলাম জানায়, ছাতির বাজার এলাকার ৫৩ নং দাগে স্থানীয় হেলাল উদ্দীন চাঁদপুরের একজনের কাছে দেড় বিঘা জমি বিক্রি করেন। ৫৩ নং দাগ গেজেট, জোত জমিও আছে।
রতনা বলেন, ৫৩ নং দাগ সবই বনের গেজেট। আমার এটাও গেজেট। কিন্তু কেউর বাড়িঘর যদি না হইতো তে একটা কথা আছিন। যারা ফরেস্টার কে টাকা দিতাছে তাগর বাড়ি ঘর হইতাছে। আর যারা টাকা দেয় না তাগর গুলা ভাংচুর করতাছে। ভাংলে সবগুলা ভাংতে হবে, শুধু আমার ভাংবে কেনো। আর উপর থেকে চাপ গেলে আমনের (এই প্রতিবেদক) কথা কইয়া টাকা খাইতাছে তারা। আপনের নাম বেইচ্ছা ফরেস্টার টাকা নিতাছে। যেইহানে যাইতাছে হেই হানই আপনের (এই প্রতিবেদক) নাম বলতাছে।
এছাড়া সাতখামাইর বিট থেকে তিন কিলোমিটার দূরে হক্কের মোড়ের সাথে বন বিভাগের বাগেনের ভেতরে পারভীনা নামে একজনের স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথমে লেবার সাদিরকে দিয়ে ডুনেশন নেন। পরদিন সকালে গিয়ে ফরেস্টার নোয়াব হোসেন বাগান মালি প্রচলিত নাম মাসুম (মঞ্জুরুল করিম) কে সাথে নিয়ে ২০ টাকা দাবি করে আসেন। বিষয়টি রেঞ্জারকে জানানো হলে স্থাপনা ভাংতে যান নোয়াব হোসেন সিকদার। এসময় স্থাপনা মালিক চড়াও হয়ে ফরেস্টার নোয়াব হোসেন কে বলেন, প্রথমে ১০ হাজার নিয়েছেন আবার ২০ হাজার চেয়েছেন, এখন আবার ভাংতে আসছেন। এটা কি শুরু করেছেন। এসব কথা জানান পারভিনার ভাই হাবিবুর ওরফে হাবি। তিনি আরও বলেন, আমাদের এটা কালেক্টরি খাস, বনের খাস না।
বিট কর্মকর্তা নোয়াব হোসেন বলেন, কোন টাকা নেওয়া হয়নি। বাগেন ভিতরে পারভিনের স্থাপনা আগের। সকালে গিয়ে ছিলাম, এখন আংশিক করা হচ্ছে। আকন্দ রোডের ওখানে শাহীদার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
ফরেস্টার (চলতি দায়ীত্ব রেঞ্জার) মীর বজলুর রহমান বলেন, এগুলো আগের, এখন এগুলো ভাংতে গিয়ে কি গেঞ্জাম করবো নাকি। পাবলিকের সাথে ঝামেলা করা যাবে না।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নূরুল করিম কে জানানো হলে তিনি বলেন, এসিএফ কে পাঠানো হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখালে বলে রাখা ভালো এই কর্মকর্তা কে একাধিকবার বিভিন্ন স্থানে গেজেট দখলসহ সুফল প্রকল্পে অনিয়মের তথ্য জানানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নিজের দায় সাড়েন। কিন্তু এপর্যন্ত কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বমুহূর্তে অর্থাৎ দুপুর সারে ১২ টায় রেঞ্জার মীর বজলুর রহমান প্রতিবেদক কে ফোন করে বলেন, ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি, আমি এখন রাস্তায় আছি। সময় থাকলে আসেন।