কক্সবাজার প্রতিনিধি।।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী লাইট হাউজস্থ কটেজ জোনের ২টি কটেজ থেকে ১৮ জন নগরবধূ (যৌন কর্মী) ও খদ্দেরসহ ২২ জন আটকের ঘটনায়
২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৭ মে শনিবার
কক্সবাজার সদর মডেল থানার সাব- ইন্সপেক্টর মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। শনিবার আটকদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরআগে শুক্রবার (৬ মে) রাত ৮ টা থেকে রাত পৌনে ৯ টা পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডেলাইট হাউজস্থ আমির ড্রীম প্যালেস, ঢাকার বাড়ী-২ সহ সাতটি কটেজে প্রকাশ্যে পতিতা ব্যবসা চললেও
দুইটি কটেজে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ( তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এসময় উদ্ধার করা হয় ১৫০ পিস কনডম। আটককৃতদের মধ্যে ১৮ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ রয়েছে।
পুলিশ বলছে, আটক এসব নারী-পুরুষ কটেজগুলোতে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে।
আটকৃত ও মামলার আসামীরা হলেন, সুনিল মন্ডল (৪৮),আবদুর রহিম (৩৮), একরামুল হক ফাহিম (২০), মো. সাইফুল ইসলাম (১৯), সেলিনা আকতার মিনু (২১), পিংকি আকতার বৃষ্টি (১৯), বৃষ্টি মল্লিক রানী (২৩), শাকিলা আকতার (২০), তাসলুমা আকতার মুন্নি (২৩), রুখসানা আকতার শারমিন (২০), মিম আকতার মাহি (২৬), শিউলি বেগম বিন্দু (২৩), মর্জিনা (২৪), লিজা মনি (২২), কুলসুম বেবি আকতার হাবিবা (২৩), রাবেয়া আকতার (২৮), তাহমিনা আকতার স্মৃতি (২৬),
জান্নাতুল ফেরদৌস (২৭), সেতারা বেগম রোহিঙ্গা (২৫), ডালিয়া আকতা সুমাইয়া (২৬), সুমি আকতার তানজিনা (২৩), কুলসুম বেগম (২৭)। এছাড়া পলাতক আসামী করা হয় ইসমাইল হোসেন শাহীন (৩২), জাহেদ (২৮), বশর (৩৫), সিরাজ (৪৫) সহ ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার সাব- ইন্সপেক্টর মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে (মামলা নং-৯, জিআর-২৯৪) দায়ের করেন।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, গত ঈদের দিন থেকে হোটেল মোটেল জোনে নজরদারি বাড়ানো হয়। নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়। যার ভিত্তিতে শুক্রবার ৬ মে রাত ৮ টার পর থেকে ২টি কটেজে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে লাইট হাউজ স্বরণ এলাকার আমির ড্রিম প্যালেজের ২য় ও ৩য় তলা এবং ঢাকার বাড়ী-২ এ অভিযান চালিয়ে ৪ জন খদ্দের ও ১৮ জন যৌনকর্মীকে আটক করা হয়।
তবে, অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে কমফোর্ট কটেজ ও বেলাভুমি কটেজ থেকে গোপন পথ দিয়ে আরো অর্ধশত যৌনকর্মী ও খদ্দের পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিযান প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর মডেল থানার চার্জ অফিসার (ওসি তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, হোটেল-মোটেল জোনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এভাবে ঝটিকা অভিযান চলবে। অভিযানে আটক সকলের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনের মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় কটেজ ভাড়াটিয়া (পরিচালক) মালিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পর্যটন শহরের অনৈতিক কর্মকাণ্ড, মাদক, জুয়া, চুরি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
শনিবার বিকালে আটকদের আদালতে সোপর্দ করা হলে, আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে, চিহ্নিত পতিতা ব্যবসায়ী ঢাকার বাড়ী-২ কটেজের ভাড়াটিয়া মালিক (পরিচালক) আব্বাসকে আসামী না করায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও ৩/৪ টি মানবপাচার আইনে মামলা রয়েছে।