শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার।।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে টিউব নিয়ে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও এক বিপন্ন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে লাইফগার্ড ও বীচ কর্মীরা।
নিহত ব্যক্তি হলেন, উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প-২ এর ডি-ব্লকের মৃত হাবিব উল্লাহর ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৬)।
বিপন্ন ব্যক্তি হলেন, একই ক্যাম্পের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে রায়হান।
জানা গেছে, ৪ মে বুধবার বিকেল পৌনে ৫ টার সময় রোহিঙ্গা কিশোর সাইফুল ইসলাম সুগন্ধা পয়েন্টের হোটেল সী প্রিন্সেস বরাবর সমুদ্রে নামে এবং টিউব নিয়ে সাতার কাটে । হটাৎ একটি বড় ঢেউ এসে টিউব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় তাকে। তারপরইগোসল সমুদ্রে ডুবে যেতে দেখে ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফগার্ড ও বীচ কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সাইফুলকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় অপর একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর প্রীতেশ তালুকদার জানান, বুধবার দুপুর ১ টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে তিন বন্ধু সহ দুপুর অনুমান ২ টার সময় সুগন্ধা বীচে আসে। সুগন্ধা বীচে ঘুরা ফেরা করে বিকাল অনুমান পৌনে ৫ টায় টিউব নিয়ে সাগরে নেমেই দূর্ঘটনায় কবলিত হন তারা।
পরে লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়। আমি তাদেরকে দ্রুত কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সাইফুল মারা যান। বর্তমানে তার লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। অপরজন চিকিৎসাধীন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিল। পরে টিউব নিয়ে সমুদ্রে গোসল করার সময় এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, উখিয়া ও টেকনাফেট বিভিন্ন ক্যাম্পের বাইরে এসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা ৪৪৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। ৪ মে বুধবার দুপুরে ও বিকালে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু ও নারী রয়েছেন । আটককৃতদের কক্সবাজার সদর মডেল থানা হেফাজতে আনা হয়।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান পিপিএম জানান, শিবির ছেড়ে শত শত রোহিঙ্গা কক্সবাজারের নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি ঘটছে।
তিনি আরো জানান, আটক রোহিঙ্গাদের আপাতত শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের ভাসানচরে পাঠানো হবে কিনা তা আরআরআরসি সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানান তিনি।