দু’বছর পর এবার থাকছে মঙ্গল শোভাযাত্রা: ব্যাপক প্রস্তুতি
দু’বছর বন্ধ ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা। দফায় দফায় করোনা বিধিনিষেধে মঙ্গল শোভাযাত্রা তো দূরের কথা ভয়ে ঘরের বাইরে পা রাখেননি সাধারণ মানুষ। সেই অবস্থা কেটে গিয়েছে। তাই মঙ্গল শোভাযাত্রার ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চারুকলা অনুষদ। এখানকার শিক্ষার্থীরা রাতদিন কাজ করে চলছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সদর ফটকে পৌঁছাতেই মোলায়েম সুরে ভেসে এলো ‘তুমি নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’। চৈত্রের খড়তাপ অনেকটা প্রশমিত হলো সঙ্গীতের সুরমুর্ছূনায়।
পা বাড়িয়ে সামনে এগুতেই দেখা গেলো নানা রকমের পাখি, লক্ষ্মী সরা, মুখোশসহ বৈশাখী উপকরণ। চারুকলায় যেন নববর্ষের হাট বসেছে। এখানের পড়ুয়ারা জানালেন, অঞ্চলভেদে লক্ষীসরা নানা রকম হয়ে থাকে। ফরিদপুরি, সুরেশ্বরী, শান্তিপুরী এবং ঢাকাই সরা। নানা রকমের পুতুল আঁকা হয় লক্ষীসরায়। যার মধ্যে লক্ষ্মী, জয়া বিজয়াসহ লক্ষ্মী, রাধাকৃষ্ণ ইত্যাদি।
এগুলো বিক্রিও হচ্ছে। বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীশিল্পী কনক খান বলেন, করোনায় দু’বছর বন্ধ ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা। সেকারণে মঙ্গলশোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারেননি। করোনাকালীন আমাদের পরিস্থিতিটা এমন হয়েছিলো যে, জীবন রক্ষার তাগিদ যেখানে তাড়া করতো, সেখানে মঙ্গলশোভাযাত্রা দুর অস্ত!
সপরিবারে চারুকলায় এসেছেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. আসফিয়া সুলতানা জানালেন, দু’বছর পর শিশুসন্তানদের নিয়ে মুক্ত বাতাসে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। সঙ্গের ছোট্টসোনা মণিরা সে কি চঞ্চল, ছুটোছুটি। চারুকলার সবুজ চত্বরে প্রজাপতির মতো ছুটোছুটি করলো তারা।
বার্তা২৪.কমকে চারুকলার বেশ ক’জন শিক্ষার্থী দীর্ঘশ্বাস বললেন, দেখুন দুটো বছর কেটে গিয়েছে, কিন্তু আমরা মঙ্গলশোভাযাত্রা নিয়ে পথে নামতে পারিনি। আর কিভাবেই নামরো বলুন? দফায় দফায় করোনা বিধিনিষেধে মঙ্গল শোভাযাত্রা তো দূরের কথা ভয়ে ঘরের বাইরে পা রাখেননি সাধারণ মানুষ। সেই অবস্থা কেটে গিয়েছে। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে চারুকলার। এখানকার শিক্ষার্থীরা রাতদিন কাজ করে চলছেন।
চারুকলার আমতলার একটি ঘরের দেওয়ালে আপন মনে এঁকে চলেছেন করনীয়া অধিকারী। এগিয়ে যেতেই বললেন, প্রথম বর্ষে চারুকলায় ভর্তির পরই করোনার কবলে পড়েন তিনি। তাই দু’বছর মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে না পেরে হৃদয়েরক্ষরণ হয়েছিলো। এবারে তা পুষিয়ে নিতে আপন মনে কাজ করেছেন তিনি।
চারুকলার নীচতলার একটি কক্ষে প্রবেশ করে মনে হলো মুখোশের ভুল করে জগতে ঢুকে পড়া। এখানে তৈরী হচ্ছে নানা রকমের মুখোশ। ৫০০ টাকা থেকে হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে এক একটি মুখোশ। আর পাখি, লক্ষীসরা প্রকারভেদে ২০০ থেকে শুরু করে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন পাখি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। বিক্রিলব্ধ টাকা শিক্ষার্থীদের নানা উপকরণের কাজে ব্যয় হচ্ছে। বার্তা