দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দেড়বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরে তা খুলে দেয় সরকার। তারপরেও থেমে নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই স্কুল ছুটির ঘটনা। সম্প্রতি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত দক্ষিন মোহাম্মদপুর রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিদিন শিক্ষার্থিদের ছুটি দিয়ে চলে যান শিক্ষকগণ। নির্দিষ্ট সময়ের আগে মাদ্রাসা ছুটি শেষে আবার কেউ,কেউ ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থিদের প্রাইভেট গনিত পড়ান। এছাড়াও স্থানিয় এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা সংশ্লীষ্টদের অভিযোগ ওই মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. ইউনুস মাদ্রাসার কাজে বাহিরে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই দুপুর ১টার মধ্যে শিক্ষার্থিদের ছুটি দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া হয়। সরজমিনে ওই মাদ্রাসাটি ঘুরে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। গত বৃহস্পতিবার (২৪মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় ওই মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসাটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার এক শিক্ষক বলেন, গরমের কারণে আমরা মর্নিং (সকাল) সাড়ে ৯টায় ক্লাস করে ১২টা ১০ মিনিটে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য মাদ্রাসাগুলোও নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শিক্ষার্থিদের ছুটি দিয়ে দিচ্ছে তাই আমাদের মাদ্রাসাও ছুটি হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মবহির্ভূতভাবে ওই মাদ্রাসায় একটি খাবারের দোকান দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। যা ওই মাদ্রাসার দফতরিকে দিয়ে চালানো হয়। শিক্ষার্থিরা বলেন,প্রায় সময়ই মাদ্রাসাটি জোহরের নামাজের সময় অথবা নামাজের পরে ছুটি দেয়া হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যবসার উদ্দেশ্যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেয়ার নির্দেশনা নেই। তবে দুর্নিতি দমন কমিশনের নির্দেশনায় শিক্ষার্থিদের সৎ ও আদর্শবান হওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে সততা ষ্টোর দিতে পারবে। যেখানে শুধু পণ্যের মূল্য তালিকা ও টাকা রাখার জন্য একটি বাক্স থাকবে। এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো.ইউনুসকে ফোন দিলে তিনি মটর সাইকেলে থাকায় বক্তব্য দিতে পারেন নি। পরে কথা বলবেন বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো.খালেক মুন্সি বলেন, মাদ্রাসাটিতে দির্ঘদিন ধরে নিয়মের বাহিরে বিকেল ৪টার আগেই ছুটি দেয়া হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে সুপারসহ শিক্ষকদের হুশিয়ার করেছি,কিন্তু তারা মানছেন না। মাদ্রাসায় আলোচনা ছাড়াই সততা ষ্টোর নামে একটি দোকান খোলা হলেও সেখানে নেই কোনোও মূল্য তালিকা ও টাকার বাক্স। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার খলিলুর রহমান বলেন, চরফ্যাশন উপজেলার একাধিক দাখিল ও আলিম মাদ্রাসা পরিদর্শন করেছি। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার তথ্য রয়েছে। এছাড়াও দক্ষিন মোহাম্মদপুর রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিদর্শন করে এর আগেও অনিয়ম পেয়েছি। ওই মাদ্রাসার সুপারকে এর আগেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দির্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার দায়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর তাকে ‘এবসেন্ট’ দেখানো হলেও তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।