আজ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় অনুষ্ঠিত হল দুগ্ধপণ্যের এক ভিন্নধর্মী মেলা। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চরফ্যাশন বাজারস্থ কয়েকটি দুগ্ধপণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) সরকারের পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) মাধ্যমে পরিচালিত সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি) এর আওতায় আয়োজনটি করে।
সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে ৩৩ মহিষের দুধের তৈরি ভৈষা দই এবং ২৫ ছাড়ে ঘি, ছানা, রসমালাই, সর মালাই, ক্ষিরপæলি সহ নানা ধরনের দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রি হয়।
মেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় শুরু হয় দোকানগুলোতে। বিশেষকরে, ভৈষা দই বিক্রির দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পরার মত।
স্বনামধন্য ভৈষা দই বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান রহমানিয়া দধি ঘরের দই দুপুর গড়ানোর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ায় অসংখ্য ক্রেতাদের হতাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। দোকানের মালিক মোঃ সিরাজ মিয়া বলেন, “এমন আয়োজন আগে কখনো করিনাই, তাই বুঝতে পারিনাই এত ভিড় হবে”, ক্রেতাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগামীতে দ্বিগুণ প্রস্তুতি নিয়া মেলায় দাড়ামু, আপনাগো কাউরে ফেরত যাইতে হইবনা।“
রস-মিঠাই নামের দোকানে দেখা গেছে বিকাল ৪টার আগেই তাদের উচ্চ মূল্যের সকল ধরণের মিষ্টি যেমন, ক্ষিরপæলি, সরমালাই, কাঁচাগোল্লা, ছানার বালুসাই, হরলিক্স চমচম এর স্টক শেষ হয়ে গেছে।
এলাকার সমাদৃত মিষ্টি প্রস্তুতকারী নিরালা রেস্টæরেন্ট তাদের দৈনিক গড় বিক্রির তিন গুন মিষ্টি নিয়ে আয়োজনটিতে অংশগ্রহণ করে। বিকেল ৫টা নাগাদ তাদের পণ্যও শেষ হয়ে যায়। দোকান মালিক তরুণ চন্দ্র দে বলেন, “এত মানুষ আসবে জানলে আরও বেশী মিষ্টি তৈরি রাখতাম। তবে এসইপি কে ধন্যবাদ যে তারা আমাদের এমন একটা আয়োজন করে দেখিয়ে দিয়েছে এই এলাকার মানুষ কতটা মিষ্টি প্রিয়। আগামীতে আমরা নিজেরাই বছরে অন্তত একবার এমন আয়োজন করব।“
সাস্টেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি) এর মাধ্যমে ভোলা জেলাকেন্দ্রিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) চরফ্যাশনে উৎপাদিত দুগ্ধ পণ্যকে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত ও বাজারজাতকরণে কাজ করছে। সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পর্যায়ে পরিবেশবান্ধব খামার তৈরি, নিরাপদ ও আধুনিক প্রযুক্তিতে পণ্য প্রক্রিয়া এবং বাজারজাতকরণে প্রান্তিক খামারি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সংস্থাটি। পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে আর্থিক ও সব ধরনের কারিগরি সহায়তা।
এফডিএ নিবার্হী কমকর্তা কামালউদ্দিন জানায়, তাদের সহায়তায় এই এলাকার দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদভাবে বাজারে আসছে। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। ভৈষা দই এখন একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত সরবরাহ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ঢাকার বাজারে পরিচিতি পাচ্ছে। অচিরেই এই পদ্ধতিতে অনেক স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের উৎপাদিত দুগ্ধপণ্য জাতীয় বাজারে নেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে আশা করা যায়।