শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার।।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী খালে অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ২ টি ড্রেজার মেশিন ও ৫০ ফুট পাইপ জব্দ এবং একইভাবে মেদাকচ্ছপিয়া পাগলিরবিলে আরো একটি বালির মেশিন ধ্বংস করেছে বনবিভাগ।
বৃহষ্পতিবার (১০ মার্চ) রবিবার সকালে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমদ বাবুলের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে ২টি বালির মেশিন ও ৫০ ফুট পাইপ জব্দ করেন। একইদিন সকালে ইউনিয়নের মেদাকচ্ছপিয়া বনবিট কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাগলিরবিলে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরো একটি বালির মেশিন ধ্বংস করা হয়।
এদিকে, খুটাখালী খালটি প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে আসছে। কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলনকারীও সক্রিয় ছিল সেখানে।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের পক্ষ হয়ে ইজারা বাতিলের আবেদন করে ৫ লাখ টাকার সুবিধা নেন ফুলছড়ি বিট কর্মকর্তা ফারুক বাবুল। ১০ মার্চ বালু মহালে অভিযান চালানোর কারণে ঘুষের ৫ লাখ টাকা ফেরতের আল্টিমেটাম দিয়েছে বালু উত্তোলনকারী চক্র।

মেদাকচ্ছপিয়া বনবিট কর্মকর্তা মোঃ শাহিন আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মেদাকচ্ছপিয়া ও সাফারি পার্কের যৌথ উদ্দোগে অভিযান চালানো হয়। এসময় অবৈধ বালি উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি সেলু মেশিন ধ্বংস করে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমদ বাবুল বলেন, খুটাখালী বিটের আওতাধীন পাহাড়ি এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ টি ড্রেজার মেশিনসহ ৫০ ফুট পাইপ জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এ জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ও ব্যাপক গণসচেতনতা কামনা করেছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমদ বাবুল।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুটাখালী এলাকার কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী বলেন, তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে খুটাখালী খাল ইজারা বন্ধের আবেদন করেন ফুলছড়ি বিট কর্মকর্তা ফারুক বাবুল। তিনি উর্ধতন কর্মকর্তাদের নামে ৫ লাখ টাকাও নিয়েছেন। ইজারা দেয়া হলে ব্যয় হবে কোটি টাকা। আর ইজারা বন্ধ রাখা গেলে তারা লাভবান হবে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক বাবুল ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েও অভিযান চালিয়ে আমাদের ক্ষতি করেছে। তাকে দফায় দফায় আরও মোটা অংকের টাকা দেওয়ার কথাও ছিল।
টাকা নেওয়ার বিষয় কাউকে বললে উল্টো মামলায় জড়ানোর হুমকি দেন। তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ফারুক বাবুলকে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক বাবুল বলেন, গত ৩০/১২/২০২১ ইং ( স্বারক নং -২২.০১.২২০০,৭৮২.৮.০০০, ২১/৫২৯) খুটাখালী খাল ইজারা বন্ধের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি। যাহা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক কক্সবাজার বরাবর প্রেরণ করেছে।
তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতি বারের অভিযানে মেদাকচ্ছপিয়া,সাফারি পার্ক, খুটাখালী, ফুলছড়ি, নাপিতখালী ও রাজঘাট বিটের কর্মকর্তা, স্টাফ, হেডম্যান, ভিলেজার ও সিপিজি সদস্যরা অংশ নেন।