লক্ষ্মীপুরে ড্রাগ পরির্দশক এর লেলিয়ে দেওয়া দালালরা কাজ করছে মাঠে! (ধারাবাহিক প্রতিবেদন-১)
বৈধভাবে ফার্মেসী ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন ড্রাগ লাইসেন্স। আর সেটি সংগ্রহ করতে হয় ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয় থেকে। এ সুযোগে প্রতিটি লাইসেন্সের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে দালালের মাধ্যমে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন লক্ষ্মীপুর ড্রাগ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) পরির্দশক সুষীল কুমার ঢালী।
নির্দিষ্ট টাকা দিতে কেউ অপরাগতা প্রকাশ করলে শিকার হন নানা হয়রানির। এমনকি লাইসেন্সপ্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে অনেকেরই।
ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, ড্রাগ সুপারকে ম্যানেজ করে ফার্মেসীতে ওষুধ বিক্রেতারাই দিচ্ছেন সকল রোগের প্রেসক্রিপশন। এতে অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের এ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে উনার কাছে মুঠোফোনে এই সকল অনিয়ম ও দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়ে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা না বলে ফোন কেটে দেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ওষুধ প্রশাসনের কাছ থেকে ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়। তার জন্য প্রয়োজন ফার্মাসীস্টের অঙ্গীকারপত্র ও ফার্মেসী কাউন্সিল থেকে ৬ মাস মেয়াদি কোর্সের সনদপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র।
এছাড়া লাইসেন্সের জন্য সরকারি ফি হচ্ছে, পৌর এলাকার জন্য ২ হাজার ৫’শ ও ইউনিয়নগুলোতে ১ হাজার ৫’শ টাকা। তাছাড়া প্রতি দুইবছর পর পর নবায়ন করতে হয় লাইসেন্সটি। এর জন্য পৌর এলাকায় ১৮’শ এবং ইউনিয়নগুলোর ফার্মেসীর ক্ষেত্রে ৭’শ টাকা ফি’ নির্ধারিত।
কিন্তু এসব নিয়মগুলো অনিয়মে পরিণত হয়েছে লক্ষ্মীপুরের ড্রাগ সুপারের লেলিয়ে দেয়া দালালদের ঘুষ বাণিজ্যের কারণে।
স্থানীয় এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, পরিদর্শক এর দালাল তার কাছ থেকে কাগজপত্র নেওয়ার সময় সাড়ে তিন হাজার টাকা নেন, নেওয়ার পর ওই দালাল পরর্তিতে আরো ২৫ হাজার টাকা দাবী করেন। তার পর উনি ২৫ হাজার টাকা দিতে পারবে না বললে তার কাগজ পত্র ও আগে নেওয়া সাড়ে তিন হাজার টাকা ফেরত দেননি। তার পর অফিসে গিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে লাইসেন্স করেছেন। ফার্মেসী পরিচালকগণ কোনো ডিগ্রী না নিয়ে সকল রোগের চিকিৎসা প্রদান ও ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর এসব অনিয়ম ড্রাগ সুপারকে ম্যানেজ করেই করছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন ফার্মেসী ব্যবসায়ী বলেন, লাইসেন্স করতে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দিতে হয় ড্রাগ সুপারকে। নির্দিষ্ট এই টাকা না দিলে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় এবং বঞ্চিত হতে হয় লাইসেন্স প্রাপ্তি থেকে। তাই লাইসেন্সবিহীন ওষুধ ব্যবসা করে যাচ্ছেন অনেকেই। তবে সকল রোগের চিকিৎসা নয়, নিয়মানুযায়ী প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করছেন বলে তারা দাবি করেন।
এদিকে এসব অনিয়মের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নয় লক্ষ্মীপুর ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের ড্রাগ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুষীল কুমার ঢালী।