রাজধানীর বিভিন্ন রুটে হঠাৎ করে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে যাত্রীরা। বাস না পেয়ে ফুটপাত ধরেই গন্তব্যে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে অনেককে।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) সারাদিন মিরপুর, ফার্মগেট, মতিঝিল, গুলশান, বাড্ডায় পরিবহন খুব কমই দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সড়কপরিবহন মালিক সমিতি ১৪ নভেম্বর থেকে নগরীতে কোনো ধরনের ‘সিটিং সার্ভিস’ অথবা ‘গেটলক সার্ভিস’ বাসের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন। পরিবহন শ্রমিকরা জানায়, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বিআরটিএর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দূরপাল্লার পরিবহন ও নগরীর গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।
তারা ২৭ শতাংশ বাড়ালেও অপরদিকে নতুন ভাড়ার ওপর সিটিং বাসগুলো ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১৫ শতাংশ। এই নিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে মতের অমিল হওয়ার কারণে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, প্রতিদিনই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে আমাদের। নতুন ভাড়া অনুযায়ী যাত্রীরা দিতে চাচ্ছে না। এতে করে বিপাকে পড়ছি আমরা শ্রমিকরা।তাই বাধ্য হয়ে বাস চালানো বন্ধ রেখেছি। এদিকে গাড়ি বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।
উত্তরা যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা বলেন,আমি গুলশান একটা কোম্পানিতে জব করি। এমনিতেই বেশি ভাড়া দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে, তারউপর দেখি আজ বাস সংকট। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও এখনও বাস পাচ্ছি না।সকাল বেলা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাস না পেয়ে মোটরসাইকেলে এসেছি উত্তরা থেকে। আমাকে বাড়তি ভাড়া ৩৫ টাকার জায়গায় মোটর সাইকেলে ২’শ টাকা দিয়ে আসতে হয়েছে।
ফার্মগেট দাঁড়িয়ে থাকা মো. হাসিবুল বলেন, আমার অফিস পুরান ঢাকায়। অফিস শেষ করেছি ৫টায়। আর এসেছি মাত্র।বাস এই রুটে আজ খুব কমই চলছে। মিরপুরগামী বাস কম পাচ্ছি।
তবে এখানে বাস কম হলেও মোটরসাইকেল, সিএনজি রয়েছে অনেক। বাস কম চলার সুযোগে এরা বাড়তি ইনকামে ব্যস্ত দেখা যায়। যে কয়টি বাস চলে তাও আগেই ভাড়ার কথা বলে তুলছেন যাত্রী।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলেন ডেকেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পরিবহন মালিক- শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে সরকার বাসভাড়া বাড়িয়েছে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন তারা। এর সঙ্গে যাত্রী হয়রানিও বেড়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আগামীকাল সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানান তিনি।
এনায়েত উল্লাহ বলেন, ভাড়ার যে নতুন চার্ট আছে, সে অনুসারে তা আদায় করবে যাত্রীরা। এর বাইরে কেউ আদায় করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।