খুলনায় অতিবৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি আবাদ ব্যহত; ক্ষতির আশংকা।
ইশরাত ইভা (খুলনা ব্যুরো):
টানা ৩/৪ দিনের অতিবৃষ্টিতে খুলনায় শীতকালীন সবজি আবাদ ব্যহত হচ্ছে। কৃষকেরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছিলেন। টানা বৃষ্টির কারণে বহু কৃষকের নিচু জমিতে পানি জমে বিভিন্ন প্রকারের সবজি গাছ মরে গেছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুখ বলেন, ‘লঘুচাপ কিছুটা দূরে সরে গেলেও পশ্চিমা বাতাসের প্রভাবে বৃষ্টিপাত থাকবে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত থাকতে পারে। সাগর উত্তাল রয়েছে।
মৌসুমের শেষের দিকে অনেক জমিতে শীতের আগাম সবজি চাষ হয়েছে। এসব আগাম সবজি ইতোমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। গ্রীষ্মকালীন সবজিও ক্ষেতে রয়েছে। বৃষ্টিতে সবজি গাছের গোড়ায় পানি জমে বিশেষ করে নিচু জমির পেঁপে, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, লাল শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শশা, করলা, উচ্ছে, ঢেঁড়স, মূলাসহ বিভিন্ন শাক-সবজির গাছ মরে যাচ্ছে। অনেকেরই চাষকৃত ফসলের ক্ষেত এবং বীজতলা নষ্ট হয়েছে।
বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর মাটি পুরোপুরি শুকাতে সাত থেকে দশদিন সময় লেগে যাবে। এরপর পুনরায় বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদন করতে হবে। এতে শীতকালীন সবজি আবাদ পিছিয়ে যাবে। কৃষকেরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। খুলনায় যে পরিমাণ সবজি উৎপাদন হয় তার বেশিরভাগই ডুমুরিয়া উপজেলাতে হয়।
এই উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের কৃষক শামিমুল হাসান বলেন, এ বছর বেশি লাভের আশায় শীতের আগাম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টিতে বাধাকপি ক্ষেতে পানি জমে গাছ মরে যাচ্ছে। এতে বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ সঙ্কট বাড়বে বলে কৃষকরা আশঙ্কা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে খুলনা জেলার ৯ উপজেলায় ৬ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ডুমুরিয়া উপজেলায় শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর। চাষীরা জানান, আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শীতকালীন সবজির চারা রোপণ ও বীজ বপন কাজ শুরু হয়েছিলো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত সবজি ক্ষেতের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে নিচু এলাকার কিছু জমিতে সবজির ক্ষেতে পানি জমে যায়। নিচু জমিগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে ফসলের কিছু ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।