মোঃ গোলাম আযম সরকারঃ পীরগাছা (রংপুর)ঃ
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে দ্বিতীয় দফায় ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী বিদ্যুৎ কুমার রায়কে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ। শনিবার রাতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এমন ঘোষণা দেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ৫ প্রার্থী ।
অপরদিকে রোববার সকালে উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে এক প্রতিবাদ সভা স্থানীয় মাঝবাড়ি হাফিজিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কান্দি ইউনিয়নে আমিনুল ইসলাম রাজ্জাককে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উভয় সমাবেশ থেকে মনোনীত প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নতুন করে দলের ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পীরগাছার কান্দি ইউনিয়নে বক্তব্য রাখছেন- নজরুল ইসলাম খাঁন
জানা গেছে, ইউনিয়নে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হলে উপজেলা আওয়ামীলীগ থেকে ৩৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাবি করে দলের মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেন । পরে গত বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের দপ্তর থেকে ৬ জন নতুন এবং ২ জন বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম ঘোষনা করা হয়। এতে দীর্ঘদিন থেকে দলের জন্য কাজ করা ত্যাগী নেতারা বাদ পড়ে যান। এ নিয়ে দলের ভিতর অসন্তোষ দেখা দিলে গত শনিবার তাম্বুলপুর হাইস্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশে করা হয়। ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ জাহিদুল হক সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বিপ্লব, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম কাজল ও তাম্বুলপুর ইউনিয়ন সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরদার, মনোনয়ন জমাদান কারী চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা নুরুজ্জামান বিএস, সোহরাব হোসেন মিঠু, আবুল কালাম আজাদ খোকা, যাদব চন্দ্র রায় এবং স্থানীয় আ’লীগ নেত্রী মর্জিনা বেগম, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্পাদক মোরশেদ আলম প্রমুখ। এসময় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুজ্জামান বিএস ও সোহরাব হোসেন মিঠু নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোসনা দেন।

কান্দি ইউনিয়নে প্রতিবাদ সমাবেশ উপস্থিত কমীদের একাংশ
অন্যদিকে রোববার সকালে কান্দি ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। সমাজ সেবক শামীমুল হাসান কাজল এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, কান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খাঁন, আব্দুল আজিজ, মোজাহারুল আলম, আঃ আউয়াল, দুলাল মিয়া, রাশেদুল ইসলাম, মনিন্দ্র নার্থ, আঃ কাদের, আব্দুল আহাদ সরকার।
তাম্বুলপুরের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, নৌকা আদম ব্যাপারীর কাছে বিক্রি হয়েছে। যাকে নৌকা দেওয়া হয়েছে সে দলের কেউ না। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্তের বাহিরে প্রার্থী ঘোষণা করায় তা প্রত্যাখান করা হয়। সমাবশে দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নতুন করে দলের মধ্যে থেকে প্রার্থী দেয়ার দাবি করা হয়।
কান্দির সমাবেশে বক্তরা বলেন, যাকে নৌকা দেয়া হয়েছে তিনি একজন চাকুরীজীবি। দলের সভা-সমাবেশে থাকেন না। তৃর্ণমূলের মনোনীত ব্যক্তিকে ছাড়া কিভাবে তিনি অজ্ঞাত খুঁটির জোরে নৌকা পেলো তা জনগন মেনে নেবে না।
এছাড়াও উপজেলার পারুল ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খাঁন ও অন্নদানগর ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন নির্বাচন করবেন বলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন বলেন, দলীয় প্রার্থী ঘোষণায় অন্য ইউনিয়নগুলোর চেয়ে তাম্বুলপুর ইউনিয়নে ব্যতিক্রম ঘটেছে। এতে বিদ্যুৎ কুমার রায় কি ভাবে মনোনয়ন পেলো তা সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। দলের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী সেখানে উপেক্ষিত হয়েছে। সেকারণেরই তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এছাড়া অন্য ইউনিয়নে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা তাদের বিষয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করবো। পরে দল তাদের বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে।