শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ২৮ জুলাই।।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের ঘুমন্ত ৫ ভাই বোন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দিনগত রাত পৌনে ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ভিলেজারপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। একই সময় মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনায় পাহাড় ধসে আলী হোসেন (৮০) নামের বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
এরআগে মঙ্গলবার বার উখিয়া ও টেকনাফে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গাসহ ৭ জন নিহত হন। আহত হয়েছে আরও ২ জন। পাহাড় ধসের ঘটনায় উখিয়া, টেকনাফ ও মহেশখালীতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ জনে।
বুধবার ২৮ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও নদীর ঢলের পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে ৩ যুবক নিখোঁজ রয়েছে।
জানা গেছে, ভিলেজারপাড়ার পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী ছৈয়দ আলমের পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতেও বাড়ীতে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু রাত পৌনে ২টার দিকে অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় ধ্বসে মাটির নিচে চাপা পড়ে যায় সৈয়দ আলমের ঘুমন্ত ৫ সন্তান। মাটির নিচ থেকে প্রথমে ২ জন ও পরে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাহাড় ধসের ঘটনায় হ্নীলা ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের ভিলেজার পাড়ার বাসিন্দা ছৈয়দ আলমের ৫ সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির পাশের পাহাড় ধসে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাতে মহেশখালীর হোয়ানক রাজুয়ার ঘোনায় পাহাড় ধসে আলী হোসেন (৮০) নামের বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বকর সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের ছেলে নুরুল আলম বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে বাড়িতে মাটি ঢুকে পড়ে। এতে অন্যান্য সদস্যরা বের হতে পারলেও ঘরে আটকে যায় বৃদ্ধ পিতা আলী হোসেন। পরে পাহাড়ের মাটির চাপা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় একটি গরু ও একটি ছাগলও মারা গেছে।
বুধবার ২৮ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও বাস স্টেশনের পূর্ব পাশে দরগাহ এলাকায় ঢলের পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে ৩ যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। খবর পেয়ে দমকলবাহিনীসহ স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
এদিকে, এরআগে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পানবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভূমি ধস ও পানিতে ভেসে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বালুখালীস্থ পানবাজার ক্যাম্প ১০ এ ভূমি ধসে মারা গেছেন ৫ জন। পালংখালীস্থ ক্যাম্প ১৮ তে পানিতে ডুবে মারা গেছে এক শিশু। এঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ২ জন।হতাহতরা সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক বলে নিশ্চিত করেন
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামুদ্দৌজা নয়ন।
মহেশখালীতে মারা গেছেন এক কিশোরী। মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ভোররাতে ছোট মহেশখালী উত্তর সিপাহীর পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসকালে ঘুমন্ত অবস্থায় কিশোরী মোরশেদা আক্তার (১৪) মারা যায়। সে স্থানীয় আনছার হোসেনের মেয়ে।
মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদ ছোট চেয়ারম্যান জিয়াদ বিন আলী তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে টেকনাফে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মনির ঘোনা গ্রামের পাহাড় ধসে নিহত হন রকিম আলী (৬৫)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সর্বত্র আতংক বিরাজ করছে।