সাড়ে তিন লাখ প্রবাসী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন
বিদেশগামীদের জন্য কোভিডের টিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রবাসী কর্মীদের জন্য টিকা নিশ্চিত করছে। তবে বিদেশগামী বা প্রবাসী পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু এই কঠোর লকডাউনকালে বিএমইটি’র কেন্দ্রীয় অথবা স্থানীয় অফিসে গিয়ে এই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা কতটুকু বাস্তবসম্মত?
আর এই কাজটি বাস্তবরূপরেখায় রূপান্তর করতে অগ্রণী ভূমিকায় চলে এলো বিদেশ যাত্রায় প্রবাসী কর্মীদের পাশে থাকা সাম্প্রতিক সময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন, একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম, ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপ নিরাপদে ঘরে বসে নিশ্চিত করছে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন, যার সম্পন্ন সাপেক্ষে প্রবাসী কর্মীরা সুরক্ষা অ্যাপে লগ ইন করে ভ্যাকসিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে। এই পর্যন্ত আনুমানিক ৭০ হাজারের কাছাকাছি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে গত ১৩ দিনে যা এক অনন্য সাফল্য।
প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে গড়ে ৭ লক্ষ্য মানুষ বিদেশে তাদের কর্মসংস্থানে যোগদানের জন্য গমন করে, সেই হিসেবে প্রায় ১০ শতাংশ প্রবাসী কর্মী মাত্র দুই সপ্তাহেই আমি প্রবাসী অ্যাপ দ্বারা বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে!
নিচে বিগত ১৩ দিনের চিত্র তুলে ধরা হলো:
প্রবাসী কর্মীদের টিকা প্রদাণের বিষয়টি জানাতে গত ৫ জুলাই এ টু আই একটা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ (বিএমইটি) ব্যুরোর মহাপরিচালক শহিদুল আলম তাতে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে টিকা নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষার পাশাপাশি আমি প্রবাসী অ্যাপে নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী জনাব ইমরান আহমদ এবং বিএমইটি মহাপরিচালক জনাব শহিদুল আলম জানিয়েছেন, দেশে পাসপোর্টধারী কোটি মানুষ রয়েছে, তাদের মধ্যে কারা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছে তা বিএমইটি নিবন্ধন ছাড়া নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই সেটি করা যাবে। ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ অ্যাপে নিবন্ধন করেছে। এটি বিএম ইটির ডিজিটালাইযেশন প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত সাফল্যমণ্ডিত করেছে।
ঘরে বসে যে কেউ এই নিবন্ধন করতে পারবেন। গুগল প্লে স্টোর থেকে আমি প্রবাসী অ্যাপটি নামানো যাবে। চাইলে http://www.amiprobashi.com ওয়েবসাইটে গিয়েও অ্যাপটিতে নিবন্ধন করা যাবে।
নিবন্ধন করতে হলে, প্রথমে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে আমি প্রবাসীতে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী পাসপোর্টটি স্ক্যান করতে হবে। এরপর প্রদত্ত তথ্য পাসপোর্ট ডাটাবেজের ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সেই মেসেজ এলেই বিএমইটির নিবন্ধনটি করা যাবে। এই মেসেজ আসতে ৭২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।
বিএমইটির নিবন্ধন হয়ে গেলেই প্রবাসীরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রাপ্তির লক্ষ্যে সুরক্ষা অ্যপে গিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। বিএমইটি নিবন্ধন করা থাকলে সুরক্ষায় পাসপোর্ট নম্বর দেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি যাচাই হয়ে যাবে। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন হয়ে গেলে নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে টিকা সেন্টার ও টিকা গ্রহণের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর সেই টিকা নিয়ে কেন্দ্রে যেতে হবে।
এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে আমি প্রবাসী অ্যাপ এর মাধ্যমে সরাসরি কোভিড ভ্যাক্সিন রেজিস্ট্রেশন সম্ভব নয়। আর পাসপোর্ট ডাটাব্যাংকে তথ্য যাচাইকরণ সম্পন্নে প্রতিদিনের একটি নির্দিষ্ট লিমিট রয়েছে । ফলে অনেকেরই মেসেজ পেতে দেরি হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক করে। এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।